| |
               

মূল পাতা জাতীয় ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বিলম্ব সমগ্র অঞ্চলকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে’


‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বিলম্ব সমগ্র অঞ্চলকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে’


রহমত নিউজ     19 September, 2023     05:45 PM    


রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য জরুরিভাবে কাজ করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশ প্রায় জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের ১২ লাখ মানুষকে আশ্রয়, খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে আতিথ্য করছে। আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। এটা বোঝা অপরিহার্য যে, এই সমস্যার (রোহিঙ্গা আগমন) ভার বাংলাদেশের কাঁধেই কেবল বর্তানো উচিত নয়। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক এবং টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করতে আরো বিলম্ব এবং মানবিক সহায়তার অভাব সমগ্র অঞ্চলকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারে তার উৎসস্থলে এই সমস্যার একটি টেকসই সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানান তিনি।

আজ (১৯ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (বিডিআরসিএস) ৭তম অংশীদারিত্ব সভা-২০২৩ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, বিডিআরসিএস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আব্দুল ওয়াহাব, আইএফআরসি ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির এশিয়া প্যাসিফিক আঞ্চলিক পরিচালক আলেকজান্ডার ম্যাথিউ, রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান এগনেস ধুর ও বিডিআরসিএস মহাসচিব কাজী শফিকুল আজম বক্তব্য রাখেন। এছাড়া বিডিআরসিএসের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. নুর-উল-রহমান, কোষাধ্যক্ষ মো. আব্দুস সালাম, পরিচালনা বোর্ডের সদস্য ও সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত এবং পরিচালক (আইনি বিষয়ক) এনাতুল্লাহ আকরাম, কূটনীতিক, আইএফআরসি, আইসিআরসি, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং কর্পোরেট সেক্টরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিডিআরসিএসের বিভিন্ন মানবিক ও উন্নয়নমুখী কর্মকান্ডের উপর ভিত্তি করে ‘হু উই আর’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

রাষ্ট্রপতি বলেন, এই বছরের অংশীদারিত্ব সভাটি ইতিহাসের একটি অনন্য সন্ধিক্ষণ কারণ, বিশ্ব এখন সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ হয়ে ওঠা সাম্প্রতিক কভিড-১৯ মহামারি ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। জলবায়ু পরিবর্তনকে বৈশ্বিক সংকট হিসেবে অভিহিত করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর প্রতিশ্রুতি মেনে চলার এবং বাংলাদেশের মতো দুর্বল দেশগুলোকে সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান তিনি।

বিডিআরসিএস, মানবিক ক্ষেত্রে সরকারের সহায়ক এবং আন্তর্জাতিক ফেডারেশন রেড ক্রস সোসাইটি (আইএফআরসিএস) এবং রেড ক্রিসেন্ট মুভমেন্টের সদস্য হিসাবে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং দুর্বল সম্প্রদায়ের মধ্যে স্থিতিস্থাপকতা তৈরির লক্ষ্য অর্জনে দুর্যোগ মোকাবেলা সক্ষমতা বৃদ্ধি, দুর্যোগ প্রস্তুতি সম্প্রসারণ এবং স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।  বিডিআরসিএস ২০১৭ সাল থেকে কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফে এবং পরে নোয়াখালী জেলার ভাসানচরে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত সে দেশের নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বিডিআরসিএস আশা, সমবেদনা এবং নিঃস্বার্থতার আলোকবর্তিকা হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘অগুণতি চ্যালেঞ্জের মুখে, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ১৯৭০ সালের বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের পর এবং সাম্প্রতিক বিশ্বব্যাপী মহামারি কভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবকালে এবং বিভিন্ন সময়ে স্থিতিস্থাপকতা তৈরিতে অমূল্য ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশ তার উন্নয়নের যাত্রাপথে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে, বাঙালি জাতি দারিদ্র্য ও প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ অগ্রগতি করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু হয় এবং বর্তমান সরকার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, ‘ভিশন-২০২১’ এবং ‘ভিশন-২০৪১’ এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এর মতো কৌশল গ্রহণ করেছে যা উন্নয়ন এবং প্রবৃদ্ধিতে অনুঘটকের মতো কাজ করেছে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় অংশীদারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন, যারা রেড ক্রিসেন্টের মিশনে পাশে দাঁড়িয়েছে।বাংলাদেশ এবং সমগ্র মানবতার জন্য সম্মিলিতভাবে একটি উজ্জ্বল এবং আরো স্থিতিস্থাপক ভবিষ্যত গড়ে তোলার লক্ষে ফলপ্রসূ এই অংশীদারিত্বের বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য প্রতিনিধিদের ধন্যবাদ জানান তিনি।